“অপ্রয়োজনীয় হর্ণ বাজানো থেকে বিরত থাকি, শব্দ দূষণ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ি।” এই স্লোগান কে সামনে রেখে বাংলাদেশে তৃতীয়বারের মতো বিশ্ব অটোমোবাইল দিবস-২০২৩ পালন করলো টুইন অটোমোবাইল স্কুল।
১৮৮৬ সালের ২৯ শে জানুয়ারী থেকে “বিশ্ব অটোমোবাইল দিবস” পালিত হচ্ছে। ১৮৮৬ সালের এই দিনে, কিংবদন্তি কার্ল বেনজের উদ্ভাবিত প্রথম মোটর গাড়ি (একটি ট্রাই গাড়ি) পেটেন্ট করা হয়েছিল এবং বাণিজ্যিক ভাবে রাস্তায় সফলতার সাথে চালানো হয়েছিল। আর এজন্যই সেই দিনটি থেকেই এই দিবস পালিত হয়।
ইদানিংকালে রাস্তায় বের হলেই গাড়ির হর্ণের কারণে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে যায় এবং জনস্বাস্থ চরম হুমকির মুখে। মাত্রাতিরিক্ত অনিয়ন্ত্রিত হর্ণ বাজানোর ফলে বিশেষ করে স্কুলগামী বাচ্চাদের মেধা বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই, রাস্তায় অপ্রয়োজনীয় হর্ণ বাজানো থেকে বিরত থেকে শিশুর মেধা বিকাশে সহায়তা করতে আহ্বান জানিয়েছে টুইন অটোমোবাইল স্কুল।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টুইন অটোমোবাইল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান , সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান প্রশিক্ষক মোঃ নুরুল হুদা
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উত্তরা মটরস এর সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ গাজী, সম্রাট শেখ, মেহেদী হাসান ,উত্তরা মটরস রংপুর ব্রাঞ্চ এর ইঞ্জিনিয়ার আখিনূর রহমান, প্রকিউরমেন্ট অফিসার মেহেদী হাসান ,মিৎসুবিশি মোটরস এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার রেদওয়ান রিফাত, আর এ কে সিরামিকসের অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান বাপ্পী সহ বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীবৃন্দ ।
টুইন অটোমোবাইল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, রাস্তায় মোটরযানের হর্ণ বাজানো সময় অবশ্যই আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। যথাসম্ভব কম হর্ণ বাজাতে হবে। কারণ অতিরিক্ত হর্ন বাচ্চাদের মেধা বিকাশে বাধা দেয়, সেই সাথে শ্রবণ শক্তি হ্রাস করে।
এছাড়াও বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে তিনি বলেন, যে একটি হাইড্রোলিক হর্ন গড়ে ১৩০ ডিবি (ডেসিবেল) হুইসেল তৈরি করতে পারে, যা বাংলাদেশ শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ -এ নির্ধারিত অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি, যা ব্যস্ত রাস্তা এবং শিল্প এলাকায় ৭৫ ডিবি (ডেসিবেল)। দিনের বেলা শহরে শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবল এবং রাতে ৩৫ ডেসিবল, অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালে ৩ ৫ থেকে ৪০ ডেসিবেল গ্রহণযোগ্য । যেখানে আমরা ৬০ থেকে ৭০ ডেসিবল মাত্রার শব্দ সহ্য করে যাচ্ছি। ৭৫ বা তার বেশি মাত্রার শব্দদূষণ হলে শ্রবণশক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস পায় এবং বাচ্চাদের মেধা বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।
টুইন অটোমোবাইল স্কুলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান প্রশিক্ষক মোঃ নুরুল হুদা বলেন, আমি মনে করি শব্দ দূষণ নামক নীরব ঘাতক থেকে মুক্তি পেতে আমাদের এই অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি লোকজনকে উদ্যোগ নিতে হবে এবং আমাদের দ্বারাই কিছুটা হলেও শব্দ দূষণ কমানো সম্ভব। সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তর এর কঠোর নীতির প্রয়োগ ও উচ্চমাত্রার অবৈধ হর্ণ আমদানি বন্ধের মাধ্যমে শব্দ নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করা যেতে পারে।
একজন মানুষ যখন একটি গাড়ি কেনার কথা চিন্তা করে তখন কিন্তু তিনি শোরুমে চলে আসেন এবং গাড়ি কেনার পর দিনশেষে গাড়ি সার্ভিস নেয়ার জন্য গাড়ির মালিক অথবা ড্রাইভার গাড়ি সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে আসেন।
যখনই একজন গাড়ির ব্যাবহারকারি বা ড্রাইভার আসুক না কেন তাদের শব্দ দূষণের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা ব্রান্ডের গাড়ির ডিস্ট্রিবিউটর এবং ছোট বড় সকল ওয়ার্কশপকেই উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শব্দ দূষণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
এছাড়াও শব্দ দূষণ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মোটরসাইকেল চালক, গাড়ী চালক সহ সকলকে শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।