প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে সমুদ্রসীমার ওপর যে আমাদের অধিকার আছে সেটি কখনই প্রতিষ্ঠিত হতো না। আমরা এখন যে সমুদ্রসীমা পেয়েছি, সেই সমুদ্র সম্পদ অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানোর সুযোগ পেয়েছি। বঙ্গোপসাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা সাগর। বিশ্বের অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য এখান থেকে চলাচল করে। সেদিক থেকে এখানে আমাদের অধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেদিকে লক্ষ্য রেখে সমুদ্র সম্পদকে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা চলছে।’
আজ ১৫ নভেম্বর, রবিবার সকালে উপকূলীয় বাহিনী কোস্টগার্ডের নয়টি জাহাজ ও ভোলার একটি ঘাঁটির কমিশনিং অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা জানান তিনি। অনুষ্ঠানে এ সময় রিমোট কন্ট্রোল সুইচের মাধ্যমে নৌযানগুলোর নামফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বৈশ্বিক মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সবাইকে আরো সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার কারণে অর্থনীতির গতি যেন থমকে না যায় সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
এ সময় দেশের জলসীমায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কোস্ট গার্ডের ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। এই বাহিনীর উন্নয়নে সব ধরনের সহায়তা দেবে সরকার একথা উল্লেখ করে দেশপ্রেম ও সততার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ’৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকেই কোস্টগার্ডের অবকাঠামোগত উন্নয়নে কাজ করি। ২০০৯ সাল থেকে আমরা আরও ব্যাপকভাবে উন্নয়নে কাজ করি। ২৭টি কোস্টাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারসহ ৫৫টি অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। গত ১২ বছরে কোস্টগার্ডের জন্য বিভিন্ন আকারে ৫৫টি জাহাজ ও জলযান নির্মাণ করা হয়েছে। নিজস্ব প্রশিক্ষণ বেস নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা আমাদের কোস্টগার্ডকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে চাই।
নতুন এ ১০টি নৌযান যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে কোস্টগার্ড আরও একধাপ এগিয়ে গেল বলে জানান শেখ হাসিনা। বিভিন্ন জলযান ও যুদ্ধ জাহাজ এখন বাংলাদেশেই তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে জাহাজের কমিশনিং ও বিসিজি বেইস ভোলার উদ্বোধন উপলক্ষে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কোস্ট গার্ড পূর্বাঞ্চলের বেইস স্টেশনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হকের কাছে কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন।
নয়টি জাহাজের মধ্যে চারটি ইতালি থেকে কেনা হয়েছে। বাকি পাঁচটি তৈরী করা হয় নৌবাহিনী পরিচালিত নারায়ণগঞ্জ ও খুলনা শিপইয়ার্ডে । ইতালি থেকে কেনা চারটি অফশোর পেট্টোল ভেসেল হলো বিসিজিএস সৈয়দ নজরুল, বিসিজিএস তাজউদ্দিন, বিসিজিএস মনসুর আলী ও বিসিজিএস কামরুজ্জামান।
দেশে তৈরী ভেসেলগুলো হলো বিসিজিএস সবুজ বাংলা, বিসিজিএস শ্যামল বাংলা, বিসিজিএস সোনার বাংলা ও বিসিজিএস অপরাজেয় বাংলা। এছাড়া দুটি ফাস্ট পেট্টোল বোট বিসিজিএস সোনাদিয়া ও বিসিজিএস কুতুবদিয়া আজ এ বাহিনীর বহরে যুক্ত হবে।