সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । তাঁকে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষণ ঘটনার ওই ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলারও একমাত্র আসামি সে। সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোতির্ময় সরকার জানান, ঘটনার পরপরই আসামি শনাক্ত হলে পুলিশ গ্রেপ্তার তৎপরতা শুরু করে। মামলা হওয়ার আগে থেকেই পুলিশ আসামি ধরার অভিযান চালিয়েছে। মামলার পর গ্রেপ্তার অভিযান আরও জোরালো করা হয়েছে।
গেল শুক্রবার রাত পৌনে আটটা থেকে সাড়ে আটটার দিকে সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণের এই ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মোট নয়জনের বিরুদ্ধে ওই তরুণীর স্বামী শাহপরান থানায় মামলা করেছেন। তালিকায় উল্লেখিত সবাই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত। তাঁরা হলেন সাইফুর রহমান (২৮), তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক আহমদ (২৮), শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম (২৫)।
এজাহার তথ্যানুযায়ী, আসামি সাইফুর রহমানের বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জে। তাঁর বর্তমান ঠিকানা এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়কের বাংলো। শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনির বাড়ি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বাগুনিপাড়ায়। বর্তমান ঠিকানা ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের ২০৫ নম্বর কক্ষ। মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুমের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামে। রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় জগদল গ্রামে। অর্জুনের বাড়ি জকিগঞ্জের আটগ্রাম। তারেক সুনামগঞ্জ শহরের নিসর্গ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, সাইফুর, রনি ও মাহফুজুর ইংরেজি বিভাগের স্নাতকের অনিয়মিত শিক্ষার্থী। অর্জুন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তারেক ও রবিউল বহিরাগত। ইতিমধ্যে রবিউল ও মাহফুজুর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেদেরকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু শিক্ষার্থী জানান, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা ধরনের অভিযোগ ছিল। তাঁরা জুয়া ও মদের আড্ডা বসাতেন নিয়মিত। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতেন না।
পুলিশ সুত্র জানায়, শুক্রবার রাতে তরুণী ধর্ষণের ঘটনা ছাত্রাবাসের যে কক্ষটির সামনে ঘটেছিল, সেটি ‘ছাত্রলীগের দখল করা কক্ষ’ হিসেবে পরিচিত। করোনাকালে কলেজ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রাবাসটিতে অবস্থান করছিলেন তাঁরা। অতপর শনিবার পুলিশ ওই কক্ষে অভিযান চালিয়ে একটি পাইপগান, চারটি রামদা ও দুটি লোহার পাইপ উদ্ধার করে। ওই কক্ষে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ছাত্রলীগের কর্মী সাইফুর থাকতেন। ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুরকে একমাত্র আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি মামলা হয়েছে।