কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে বিয়ে করে এলাকায় সমালোচনার ঝড় তৈরি করেছেন ৪৫ বছর বয়সী এক ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকার। ৩য় বারের মত বিয়ের আসরে বসায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। সরকার বাল্যবিয়ে মুক্ত দেশ ঘোষণা করার পরও একজন ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই বাল্যবিয়ে করে সরকারের সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করায় ব্যাপক সমালোচনা ও প্রশ্ন উঠছে তার উপর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের দোলন গ্রামের বকসীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী বন্নি আক্তারের ওপর নজর পড়ে বুড়াবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের।শিক্ষার্থীর বাবা বাচ্চু মিয়া প্রতিবন্ধী হওয়ায় সংসারে ছিল অভাব। এই সুযোগটিকে কাজে লাগান চেয়ারম্যান। এরপর ওই শিক্ষার্থীকে নানাভাবে ফুঁসলিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং হতদরিদ্র মেয়েটির পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তার প্রলোভন দেখাতে থাকেন চেয়ারম্যান।
এক পর্যায়ে পরিবার প্রলোভন সামলাতে না পেরে ও চাপে পড়ে গত রবিবার (১লা নভেম্বর) রাতে মেয়েটির পরিবারের লোকজন চেয়ারম্যানের সাথে তার বিয়ে দেন। ব্যক্তিগত জীবনে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের এক স্ত্রী এবং কলেজ পড়ুয়া এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তবে এর আগে তিনি আরো একটি বিয়ে করলেও সেটি বেশিদিন টেকেনি। চেয়ারম্যানের ৩য় বিয়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।
একজন নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান প্রকাশ্যে বাল্যবিয়ে করলেও প্রশাসন কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় জনমনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। বকসীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুজ্জামান বলেন, ওই শিক্ষার্থী আমার স্কুলের মানবিক বিভাগের ৯ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। তার বিবাহের খবরে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি কোনো মাধ্যমেই। তবে এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, যেহেতু বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে, সেখানে মোবাইল কোর্ট করার সুযোগ নেই। তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।