
বিএমসিএজি ব্রেমেন ব্রাঞ্চের উদ্যোগে গ্র্যান্ড ইফতার মাহফিল-২৫ অনুষ্ঠিত
প্রবাসে ধর্মীয় ও সামাজিক সংহতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বাংলাদেশি মুসলিম কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন জার্মানি (বিএমসিএজি) ব্রেমেন ব্রাঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে এক জাঁকজমকপূর্ণ গ্র্যান্ড ইফতার মাহফিল।
গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) জার্মানির ব্রেমেন শহরের ইসলামিক ফেডারেশন হল সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই মাহফিলে অংশ নেন প্রায় ৩০০ প্রবাসী বাংলাদেশি। যাদের মধ্যে ছিলেন শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারবর্গ।
এই আয়োজন শুধুমাত্র ইফতার অনুষ্ঠান নয় বরং এটি ছিল জার্মান প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির মিলনমেলা। যেখানে অংশগ্রহণকারীরা একে অপরের সঙ্গে ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করার সুযোগ পান।
অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ছিল রমজানের ত্যাগ, সংযম ও ধৈর্যের শিক্ষা, যা শুধু এই মাসেই নয় বরং সারা জীবনের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে থাকা উচিত।
বোরহান উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমসিএজি ব্রেমেন ব্রাঞ্চের সভাপতি আবদুল্লাহ গালিব ফুয়াদ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশি মুসলিম কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন জার্মানির প্রেসিডেন্ট ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক মিল্লিগুরুষ ব্রেমেন এন্ড নিদাজেকশন প্রদেশের প্রেসিডেন্ট একরেম খমুর্জু, শুরা ব্রেমেনের সমন্বিত সভাপতি মুরাত চেলিক, ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমের চোবান, বিএমসিএজি কেন্দ্রীয় ইয়ুথ সেক্রেটারি আদনান আব্দুল হাই, কেন্দ্রীয় অফিস সেক্রেটারি তুহিন ব্যাপারী এবং কেন্দ্রীয় এডুকেশনাল সেক্রেটারি আবদুল্লাহ আল নোমান।
বক্তারা রমজানের তাৎপর্য ও সংযমের শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করেন এবং কিভাবে এই শিক্ষাগুলো ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে প্রতিফলিত করা যায় সে বিষয়ে গুরুত্ব দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, "রমজান শুধু উপবাসের মাস নয়, এটি আত্মশুদ্ধি, সংযম ও ধৈর্যের এক মহিমান্বিত সময়। রমজানের শিক্ষাকে আমাদের সারাজীবন ধারণ করতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, “প্রবাসে থেকেও আমরা যদি একে অপরের পাশে দাঁড়াই, তাহলে আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ আরও সুদৃঢ় হবে। বিএমসিএজি সেই প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে।”
বিশেষ অতিথি একরেম খমুর্জু বলেন, "বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে মিলিত হয়ে ইফতার করা সত্যিই আনন্দের। ভবিষ্যতে আমরা একসঙ্গে আরও বড় বড় সামাজিক ও ধর্মীয় কার্যক্রম আয়োজন করতে চাই।"
শুরা ব্রেমেনের সভাপতি মুরাত চেলিক বলেন, "বাংলাদেশি মুসলিম কমিউনিটির ঐক্য ও সংহতি আমাদের অনুপ্রাণিত করে। এই ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি।"
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সামাজিক সংহতির আহ্বান করে বিএমসিএজি ব্রেমেন ব্রাঞ্চের সভাপতি আবদুল্লাহ গালিব ফুয়াদ বলেন, "এই আয়োজন শুধু ইফতার মাহফিল নয়, এটি আমাদের ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধের প্রকাশ। আমরা চাই, প্রবাসে বাংলাদেশিরা একে অপরের পাশে থাকুক, একসঙ্গে সমাজ ও কমিউনিটির জন্য কাজ করুক।"
তিনি আরও বলেন, “আমরা ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করব, যেখানে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি অংশ নিতে পারবেন।”
ইফতার অনুষ্ঠানে রকমারি খাবারের আয়োজন করা হয়, যা প্রবাসীদের মনে বাংলাদেশি সংস্কৃতির স্বাদ ফিরিয়ে আনে। অনুষ্ঠানের শেষভাগে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করা হয়।