ঢাকা   শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৬

খাগড়াছড়িতে ইরির তত্ত্বাবধানে উচ্চ ফলনশীল ধান জাতের নমুনা শস্য কর্তন 

খাগড়াছড়িতে ইরির তত্ত্বাবধানে উচ্চ ফলনশীল ধান জাতের নমুনা শস্য কর্তন 

খাগড়াছড়ি মহালছড়ি উপজেলার পাকিজাছড়ি গ্রামে এবং সদর উপজেলার ভূয়াছড়ির নতুন বাজার গ্রামে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) তত্ত্বাবধানে কম সময়ে অধিক ফলন ও রোগ-বালাইমুক্ত ইরি-এগ্রো প্রকল্পের প্রদর্শনী চাষের নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৫ মে) দুপুরে মহালছড়ি উপজেলার পাকিজাছড়ি গ্রামে মো: সুরুজ জামানের জমিতে নমুনা শস্য কর্তন সম্পন্ন করা হয় । পাকিজাছড়ি গ্রামে প্রদর্শনী জমি থেকে কর্তন শেষে ধান মাড়াই করে ব্রি ধান- ৭৪ হেক্টর প্রতি ৯ দশমিক ২০ টন, ব্রি ধান-৮৪ হেক্টর প্রতি ৭ দশমিক ৮৫ টন, ব্রি ধান-৮৮ হেক্টর প্রতি ৮ দশমিক শূণ্য ৫ টন,  বঙ্গবন্ধু ধান -১০০ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ৭৪ টন ও ব্রি ধান-২৮ হেক্টর প্রতি ৭ দশমিক ৫৮ টন ধান পাওয়া যায় । স্থানীয় কৃষক মো: সুরুজ জামান নিজে উচ্চ ফলনশীল এইসব জাত চাষ করতে পেরে আনন্দিত। তিনি ব্রি ধান- ৭৪, ব্রি ধান-৮৪, ব্রি ধান-৮৮ ও বঙ্গবন্ধু ধান -১০০ জাত চাষ পছন্দ করেন এবং আগামী মৌসুমে অধিক জমিতে চাষাবাদ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পাহাড়ি অঞ্চলে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) এর অর্থায়নে এগ্রিবিজনেস এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল এর সহযোগিতায় পরীক্ষামূলকভাবে জলবায়ু উপযোগী আধুনিক উচ্চ ফলনশীল (উফসি) জাতের কম সময়ে অধিক ফলন, রোগবালাই মুক্ত ৫ ধরনের ধান জাতের  হেড টু হেড প্রদর্শনী করা হয়। এসব ধানের জীবনকাল ১৪০ থেকে ১৪৫ দিন। মহালছড়ির স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মো: ফরিদুল ইসলাম কৃষক পর্যায়ে উচ্চ ফলনশীল এইসব জাতের প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেন । একই দিনে বিকালে সদর উপজেলার নতুন বাজার  গ্রামের কৃষক সালেহা খাতুনের জমিতে এই শস্য কর্তন করা হয়। ভূয়াছড়ির নতুন বাজার গ্রামে প্রদর্শনী জমি থেকে কর্তন শেষে ধান মাড়াই করে ব্রি ধান- ৭৪ হেক্টর প্রতি ৭ দশমিক ৯০ টন, বঙ্গবন্ধু ধান -১০০ হেক্টর প্রতি ৭ দশমিক ১৬ টন, ব্রি ধান-৮৪ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ৩৪ টন, ব্রি ধান-৮৮ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ৪২ টন ও ব্রি ধান-২৮ হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক ২৮ টন ধান পাওয়া যায় । ভূয়াছড়ির স্থানীয় কৃষক মোঃ মফিজাল ব্রি ধান- ৭৪, বঙ্গবন্ধু ধান -১০০ ও ব্রি ধান-৮৮ জাত চাষ পছন্দ করেন। চলতি মৌসুমে ভালো ফলন পাওয়ায়, আগামী বোরো মৌসুমে এই সকল  জাতের ধান অধিক পরিমান জমিতে চাষ করবেন বলে জানান। একই সাথে খাগড়াছড়িতে ভূয়াছড়ি উপজেলায় মহিলা কৃষকদের নিয়ে গঠিত গ্রুপের প্রদর্শনী প্লটের নমুনা শস্য কর্তন করা হয়। গ্রুপের কৃষকগণ স্থানীয় ধানের জাতের চেয়ে উচ্চ ফলনশীল জাত চাষ গুলো পছন্দ করেন এবং আগামী মৌসুমে বৃহৎ পরিসরে অধিক জমিতে চাষাবাদ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আন্তজার্তিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) এর বাস্তবায়নাধীন নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে উপজেলার সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জ্ঞানময় চাকমা, এগ্রিবিজনেস এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল  এর  প্রজেক্ট অফিসার বাগী মং মারমা, প্রদর্শনী জমির কৃষকগণ সহ সংশ্লিষ্ট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার এলাকার অন্যান্য কৃষকগণ উপস্থিত ছিলেন । নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে পাহাড়ি অঞ্চলে আন্তজার্তিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) এর কৃষক পর্যায়ে উচ্চ ফলনশীল ধান জাতের প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনা মহামারী পরবর্তী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে নিরলসভাবে কাজ করার জন্যে ভূয়সী প্রশংসা করেন ।