বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে একসঙ্গে কাজ করছে। রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার পশ্চিম লুঙ্গিপাড়া গ্রামে ও কাপ্তাই উপজেলার উত্তর বনগ্রামে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) তত্ত্বাবধানে কম সময়ে অধিক ফলন ও রোগ-বালাইমুক্ত ইরি-এগ্রো প্রকল্পের প্রদর্শনী চাষের নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৮ই মে) দুপুরে উপজেলার পশ্চিম লুঙ্গিপাড়া গ্রামে হলাথোয়াইউ মারমার জমিতে নমুনা শস্য কর্তন সম্পন্ন করা হয়। উপজেলার সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রীতিময় চাকমার প্রদর্শনী জমি থেকে কর্তন শেষে ধান মাড়াই করে ব্রি ধান- ৭৪ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ০২ টন, ব্রি ধান-৮৪ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ২৫ টন, ব্রি ধান-৮৮ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ৮০ টন, বঙ্গবন্ধু ধান -১০০ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ৯০ টন ও ব্রি ধান-২৮ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ১৫ টন ধান পাওয়া যায় । স্থানীয় কৃষক শাহ আলম নিজে উচ্চ ফলনশীল এইসব জাত চাষ করতে পেরে আনন্দিত। তিনি ব্রি ধান- ৭৪ ও বঙ্গবন্ধু ধান -১০০ জাত চাষ পছন্দ করেন এবং আগামী মৌসুমে অধিক জমিতে চাষাবাদ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কাউখালী উপজেলার পূর্ব লুঙ্গিপাড়া গ্রামে মহিলা কৃষকদের নিয়ে গঠিত গ্রুপের প্রদর্শনী প্লটের নমুনা শস্য কর্তন করা হয়। গ্রুপের কৃষকগণ স্থানীয় ধানের জাতের চেয়ে উচ্চ ফলনশীল জাত চাষ গুলো পছন্দ করেন এবং আগামী মৌসুমে বৃহৎ পরিসরে অধিক জমিতে চাষাবাদ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। শুক্রবার (০৫ মে) সদর উপজেলার শুকরছড়ি গ্রামে নীল চন্দ্র চাকমার জমিতে নমুনা শস্য কর্তন সম্পন্ন করা হয় । প্রদর্শনী জমি থেকে কর্তন শেষে ধান মাড়াই করে ব্রি ধান- ৭৪ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ৯৬ টন, ব্রি ধান-৮৪ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ৯৫ টন, ব্রি ধান-৮৮ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ৮০ টন, বঙ্গবন্ধু ধান -১০০ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ২০ টন ও ব্রি ধান-২৮ হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ৬৭ টন ধান পাওয়া যায় । সদর উপজেলার স্থানীয় কৃষক ইন্দ্র মুজিব চাকমা ব্রি ধান- ৮৮ ও বঙ্গবন্ধু ধান -১০০ জাত চাষ পছন্দ করেন। চলতি মৌসুমে ভালো ফলন পাওয়ায়, আগামী বোরো মৌসুমে এই সকল জাতের ধান চাষে উৎসাহিত হন। বুধবার (২৬ এপ্রিল) কাপ্তাই উপজেলার উত্তর বনগ্রামে কৃষক আলী হোসেনের জমিতে এই শস্য কর্তন করা হয়। প্রদর্শনী জমি থেকে কর্তন শেষে ধান মাড়াই করে ব্রি ধান- ৭৪ হেক্টর প্রতি ৭ দশমিক ৪৫ টন, বঙ্গবন্ধু ধান -১০০ হেক্টর প্রতি ৭ দশমিক ২০ টন, ব্রি ধান-৮৪ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ০৫ টন, ব্রি ধান-৮৮ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ৫৩ টন ও ব্রি ধান-২৮ হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ২৩ টন ধান পাওয়া যায়। কাপ্তাই উপজেলার স্থানীয় কৃষক মাসুদুর রহমান ব্রি ধান- ৭৪ ও বঙ্গবন্ধু ধান -১০০ জাত চাষ পছন্দ করেন। চলতি মৌসুমে ভালো ফলন পাওয়ায়, আগামী বোরো মৌসুমে এই সকল জাতের ধান অধিক পরিমান জমিতে চাষ করবেন বলে জানান। পাহাড়ি অঞ্চলে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) এর অর্থায়নে এগ্রিবিজনেস এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল এর সহযোগিতায় পরীক্ষামূলকভাবে জলবায়ু উপযোগী আধুনিক উচ্চ ফলনশীল (উফসি) জাতের কম সময়ে অধিক ফলন, রোগবালাই মুক্ত ৫ ধরনের ধান জাতের হেড টু হেড প্রদর্শনী করা হয়। এসব ধানের জীবনকাল ১৪০ থেকে ১৪৫ দিন। আন্তজার্তিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) এর বাস্তবায়নাধীন নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে উপজেলার সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা থোয়াইনুচিং মারমা, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মহিন উদ্দিন, এগ্রিবিজনেস এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল এর প্রজেক্ট অফিসার বাগী মং মারমা, প্রদর্শনী জমির কৃষকগণ সহ সংশ্লিষ্ট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার এলাকার অন্যান্য কৃষকগণ উপস্থিত ছিলেন । নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে পাহাড়ি অঞ্চলে আন্তজার্তিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) এর কৃষক পর্যায়ে উচ্চ ফলনশীল ধান জাতের প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষককে আধুনিক জাতের ধান চাষে আগ্রহী করার জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।