ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে সংশোধিত ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০’ অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এই অধ্যাদেশ জারি করেন। আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) এই অধ্যাদেশে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ১২ অক্টোবর ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০০’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) উপধারায় বলা হয়, ‘যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তা হলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।’ অধ্যাদেশ অনুযায়ী ৯(১) উপধারায় ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে।
গেল সোমবার মন্ত্রিসভায় খসড়া অনুমোদনের পর সচিবালয়ে ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গত কিছু দিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধগুলো কঠোরভাবে দমনের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) উপধারা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়। এই উপধারায় বিধান ছিল- যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তা হলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।’
আগে যাবজ্জীবন শাস্তি ছিল, সেই শাস্তিও দেয়া যায়নি, এখন সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করে লাভটা কোথায় হবে- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘যেভাবে প্রমোশন ক্যাম্পেইন হচ্ছে, এটাও তো একটা প্রমোশনের জায়গা। এটা অবশ্যই সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যারা ক্রাইম করে তারা অন্তত দুইবার চিন্তা করবে যে, এটাতে তো মৃত্যুদণ্ড আছে। এখন তো আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নয়। ১৮০ দিন তো দীর্ঘ সময়ও নয়। ডেফিনেটলি এটার পজিটিভ ইম্প্যাক্ট হবে।’
‘এই আইনে বলা হয়েছে আরোপিত অর্থদণ্ডকে, প্রয়োজনবোধে, ট্রাইব্যুনাল অপরাধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য করিতে পারিবে এবং অর্থদণ্ড বা ক্ষতিপূরণের অর্থ দণ্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ হইতে আদায় করা সম্ভব না হইলে, ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হইবেন সেই সম্পদ হইতে আদায়যোগ্য হইবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত সম্পদের ওপর অন্যান্য দাবি অপেক্ষা উক্ত অর্থদণ্ড বা ক্ষতিপূরণের দাবি প্রাধান্য পাইবে।’