আলু বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি খাবার। দেশের অধিকাংশ মানুষ ই পছন্দ করেন এই আলু। বছরে দেশের আলুর চাহিদা ৮০ থেকে ৮৫ লাখ টন। এ বছর উৎপাদনও হয়েছে একই পরিমাণ। তবে অপচয় হিসাব করলে ৫ লাখ টনের মতো ঘাটতি রয়েছে।আর এ ঘাটতির সুযোগেই নতুন ইতিহাস লেখা হচ্ছে আলুর বাজারে।
মৌসুমের শুরুতে যে আলুর দাম খুচরায় ছিল ১৬ থেকে ১৮ টাকা। তা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড ভেঙে ৫৫ টাকায় ঠেকেছে। বাড়তি দাম নিয়ে ক্রেতা ও খুচরা ব্যাবসায়ীরা দুষছেন কোল্ডস্টোরেজ ও আড়তের মালিকদের। আর মালিকরা বলছেন বাড়তি এ টাকা পাচ্ছে কয়েক বছর ধরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক কৃষক। কারণ কোল্ডস্টোরেজে তারাই আলু রাখছে।
সরকারি সংস্থা বিপণন ও বাজার মনিটরিং সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে আলুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। সংস্থাটির হিসাব বলেছে, গতকাল সোমবার বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। ১ মাস আগেও এ আলুর দাম ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা । আর ১ বছর আগে ছিলো ২০ থেকে ২৫ টাকা। সে হিসেবে মাসের ব্যবধানে প্রায় ২৯ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১১ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ গত বছরের এই সময়ের চেয়ে দাম দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।
যদিও খুচরা বাজারে আলুর দাম আরও বেশি। গত শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেখা গেছে, খুচরায় কোনো বাজারেই ৫০ টাকার নিচে আলু নেই । বেশির ভাগ বাজারেই তা ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর পাইকারি বাজারেও দাম বেড়ে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৭ টাকা দরে। গত বছরের একই সময়ে খুচরা বাজারে দাম ছিলো ২০ থেকে ২২ টাকা। আর পাইকারি বাজারে দাম ছিলো ১৬ থেকে ১৮ টাকা। বছরের ব্যবধানে খুচরা ও পাইকারিতে দাম বেড়ে প্রায় আড়াই গুণ হয়েছে।
খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আলুর দাম স্বাধীনতার আগে বা পরে কখনোই এত বাড়েনি। গত মৌসুমে আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। তাই হিমাগারে রাখা হয়েছে তুলনামূলক কম। করোনা ও বন্যার কারণে অন্যান্য সবজির উৎপাদন কমে যাওয়ায় আলুর চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। তবে যে হারে দাম বেড়েছে তা অনেক বেশি।