পঞ্চগড়ে মাইক্রোবাসে রাতভর এক গৃহবধূকে (২০) ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে গত সোমবার। ওই গৃহবধূর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ দুই জনকে ধর্ষক হিসেবে ও দুজন সহযোগী হিসেবে মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ময়দানদিঘী ইউনিয়নের সোনাপাড়া এলাকার জাহিদুল ইসলাম রতন (২৫), একই এলাকার অটোরিকশা চালক আমিরুল ইসলাম (৩০), পঞ্চগড় পৌরসভার নিমনগর এলাকার মাইক্রোবাস চালক শহিদুল ইসলাম (২৭) ও পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের শিকারপুর এলাকার নুর আলম (২৪)।
এদের মধ্যে জাহিদুল ইসলাম রতন ও মাইক্রোবাস চালক শহিদুল ইসলামকে ধর্ষক হিসেবে এবং আমিরুল ইসলাম ও নুর আলমকে ধর্ষণে সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গ্রেপ্তার চার আসামিকে গতকাল বুধবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের ওই গৃহবধূর সঙ্গে সম্প্রতি রং নম্বরে ময়দানদিঘী ইউনিয়নের সোনাপাড়া এলাকার যুবক জাহিদুল ইসলাম রতনের পরিচয় হয়। রতন মাঝে মধ্যে ওই গৃহবধূকে কল করে খোঁজ খবর নিতো। গত সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ওই গৃহবধূ তার স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করেন।
সেদিন বিকেলে রতন ওই গৃহবধূর মোবাইলে কল করে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। গৃহবধূও প্রলোভনে পড়ে এবং রাগের বশবর্তি হয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়ে রতনের নির্ধারিত জায়গা ময়দানদিঘী বি.আর.টি.সি. বাস কাউন্টারে যায়। সেখানে রতন ওই গৃহবধূকে বিয়ের জন্য কাজী অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমিরুলের অটোরিকশায় করে সেখান থেকে পঞ্চগড় রেলস্টেশনে নিয়ে যায়। সেখানে খাওয়া দাওয়ার পর গভীর রাতে শহিদুলের মাইক্রোবাসে ওই গৃহবধূসহ পঞ্চগড় মৈত্রি ফিলিং স্টেশনে সামনে গাড়ি থামায়।
এ সময় ওই গৃহবধূ তাদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে চিৎকার করলে তারা তাকে মারধর করে এবং গলা চেপে ধরে। একপর্যায়ে রতন ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। পরে চালক শহিদুলও তাকে ধর্ষণ করে। তারা দুজনের ভোর পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে ওই গৃহবধূকে। এ সময় অটোরিকশাচালক আমিরুল ও নুর আলম পাহারা দেয়। ভোরে ওই গৃহবধূকে মোটরসাইকেল যোগে নিয়ে বোদা বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দিয়ে চলে যায় রতন।
স্ত্রীর কল পেয়ে ওই গৃহবধূর স্বামী তাকে সেখান থেকে বাড়ি নিয়ে যায়। বাড়ি ফিরে মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) রাতে ওই গৃহবধূ তার স্বামীকে নিয়ে বোদা থানায় গিয়ে দুই ধর্ষকসহ চারজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। মামলার পর ঐদিন রাতেই রতনকে গ্রেপ্তার করে বোদা থানা-পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অপর ৩ আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটিও পুলিশি হেফাজতে আনা হয়।
বোদা থানার পরিদর্শক আবু সায়েম মিয়া জানান, ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ওই চারজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধন ২০২০ অধ্যাদেশে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা করেছেন। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।