মরণব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন দেশ বরেণ্য অভিনয়শিল্পী আবদুল কাদের। বর্তমানে তিনি চেন্নাইয়ের ক্রিস্টিয়ান মেডিকেল হাসপাতাল চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তার শরীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন।
গত ১৫ নভেম্বর এই অভিনেতার পরিবারকে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর দেন চেন্নাইয়ের চিকিৎসকেরা। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার কথা শুনে এই অভিনেতার পরিবার থেকে চিকিৎসার সব দায়িত্ব চিকিৎসকদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখন থেকেই ভাবছিল কেমো দেবে। কিন্তু কাদেরের শারীরিক অবস্থা দুর্বল হওয়ায় গতকাল রাত পর্যন্ত চিকিৎসকেরা পর্যবেক্ষণে রাখেন। পরে রাতেই এই অভিনেতার পরিবারকে জানিয়ে দেন, এই অভিনেতার শারীরিক ক্ষমতা বিচারে কেমোথেরাপি দেওয়া যাবে না।
তার পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেমি চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেন, ‘বাবার শরীরে শক্তি কম। শেষ পর্যন্ত তাঁকে কেমো দেওয়া হচ্ছে না। বাবাকে যেন বাংলাদেশে নিতে পারি, এই জন্য চিকিৎসকেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন কিছুটা সুস্থ করতে। তাঁরা বলেছেন, একটু বেটার করতে আরও দুই দিন সময় লাগবে। এই অভিনেতা এখন কিছুই খাচ্ছেন না। কিছু খেলেই তাঁর বমি হয়। তাঁকে এখনো স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। গতকাল থেকে তাঁর রক্তের হিমোগ্লোবিন ৩ থেকে ৫–এর মধ্যে ওঠানামা করছে। জেমি জানান, ২০ ডিসেম্বর দুপুরের একটি ফ্লাইটে এই অভিনেতাকে ঢাকায় নিয়ে আসার কথা রয়েছে। ঢাকায় ফেরার পরই আবদুল কাদেরকে সঙ্গে সঙ্গে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।
উল্লেখ্য, মঞ্চ থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে নাম লেখান আব্দুল কাদের। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছে যান তিনি। অভিনয় ক্যারিয়ারে কয়েকশ টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছেন। বেশিরভাগ হাস্যরসাত্মক চরিত্রে দেখা গেছে তাকে।জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র পরিচিত মুখ তিনি।
আবদুল কাদেরের জন্ম মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানার সোনারং গ্রামে। স্ত্রী খাইরুননেছা কাদের। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।সোনারং হাইস্কুল ও বন্দর হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স ও এমএ করেন।
আবদুল কাদের অর্থনীতিতে সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে অধ্যাপনা এবং বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এক্সিকিউটিভ হিসেবে চাকরির পর ১৯৭৯ সাল থেকে আন্তর্জাতিক কোম্পানি ‘বাটা’তে এখনও চাকুরীরত।