রংপুরের সদর উপজেলার পালিচড়া হাট থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাজারের পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনের আম গাছের সঙ্গে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য তৈরি হয়েছে। ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে সংশয় তৈরি হয়।
গতকাল ভোরে এক এলাকাবাসী রাজু মিয়া নামে এক ব্যক্তির মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে সদর থানা-পুলিশকে অবগত করে। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে ।
নিহত রাজু মিয়া সদ্যপুষ্করিণী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের পালিচড়া হাটের বাসায় ভাড়াটিয়া ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পাইকার হাট এলাকায়।
নিহত রাজুর সম্পর্কে খালাতো ভাই সাগর মিয়া জানান, এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল রাজু মিয়ার। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে পড়াশোনা করছেন। ছেলের লেখাপড়া ও মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েন রাজু।
একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয় তার। স্ত্রী তার বাবার বাড়ি পীরগাছা উপজেলার কদমতলীতে চলে যান। সন্তানরাও তার খোঁজ খবর নিচ্ছিল না। এ অবস্থায় চার মাস আগে সদ্যপুষ্করিণী ইউনিয়নে একটি রুম ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন রাজু। দিন-রাতে তার কাছেই খেতেন এবং রুম ভাড়ার টাকা রাজুর বোনরা পাঠাতেন।
বাসার মালিক সাবেক চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, ৪ মাস আগে একটি রুম ৭০০ টাকায় রাজু ভাড়া নেয় এবং তিনি একাই সেখানে থাকতেন। তার স্ত্রী সেখানে যান নি-ই বলা যায়।
পালিচড়া হাট এলাকার কয়েকজন দোকান মালিক বলেন, নিহত রাজু ভালো মানুষ ছিল। তার কোনো শত্রু ছিল না। সে নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে এমনটিও মনে করছেন না কেউ। কেননা সে কখনও এরকম চিন্তাভাবনার মানুষ ছিলেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, এটা আত্মহত্যা না। কেউ তাকে হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে। এ প্রসঙ্গে পালিচড়া হাট ইজারাদার ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান মিয়া মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সদর থানার এস.আই জাহাঙ্গীর বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।