ভাষা আন্দোলনের ১ম শহীদ রফিকের বসতবাড়ি ও শহীদ মিনারের রাস্তা বন্ধ করে এর গ্রামের মধ্যে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প বাতিলের জন্য শহীদ রফিকের পরিবার ও মানিকগঞ্জবাসীর মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান।
আমাদের স্বাধীনতার বীজ বপন করার সেই সময়ে আন্দোলনে রফিক নগরের, বলধারা গ্রামের, সিংগাইর উপজেলার, মানিকগঞ্জ জেলার জাতীয় বীর রফিক উদ্দিন আহমেদ মাতৃভাষা রক্ষার জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে প্রথম শাহাদাৎ বরন করেন।
ভাষা শহীদ রফিকের আত্মদানের রক্তাক্ত স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে তাঁর জন্মস্মৃতি গ্রামের নামকরণ করা হয়েছে রফিকনগর। সেই সাথে মানিকগঞ্জ জেলার সঙ্গে ঢাকার সংযোগ রক্ষাকারী ধল্লা সেতুর নাম করা হয়েছে শহীদ রফিক সেতু। এই রফিকনগরে গড়ে উঠছে রফিক স্মৃতি গ্রন্থাগার ও জাদুঘর। শহীদ রফিকের বাড়িতে নির্মিত হয়েছে ভাষা আন্দোলনের প্রতীক, শহীদের রক্তমাথা স্মৃতি জড়ানাে বাঙালির সাহসের ঠিকানা শহীদ মিনার ও সংগ্রহশালা । ভাষাশহীদ রফিককে তাঁর আত্মত্যাগে স্বীকৃতি স্বরূপ একুশে পদকে’ ভূষিত করা হয়েছে।
এই ভাষাশহীদ রফিকের স্মৃতি বিজড়িত পারিল গ্রামের বাড়িটি দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে ভাষাপ্রেমী, ইতিহাসবিদ, লেখক, কবি, গবেষক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, পর্যটক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনি নানা শ্রেণির, নানা পেশার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে থাকে। বিশেষ করে একুশে ফেব্রুয়ারিতে উপরে পড়ে মানুষের ঢল। ভাষাশহীদ রফিকের স্মৃতিধন্য জন্মস্থান পারিল গ্রামটি এখন ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে রূপ লাভ করেছে।
অথচ, এই ভাষাশহিদ রফিকের জন্ম স্মৃতি বাড়ি ও বাড়ির আঙিনায় শহিদ মিনারের সম্মুখে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে শহীদ রফিকের বাড়ি ও শহীদ মিনারটি আড়াল হয়ে পড়বে। শুধু তাই নয়-শহীদ রফিকের বাড়িতে যাতায়াতের সরু রাস্তাটিরও প্রতিবন্ধক সৃষ্টি হবে। ফলে দেশ-বিদেশ থেকে আসা দর্শনার্থীদের চলাফেরায় বিঘ্ন ঘটবে। এতে ভাষাশহীদ রফিকের স্মৃতিমাখা গ্রামটির ঐতিহাসিক শুরুত্ব কমে যাবে ফলে ভাষাশহীদ রফিকের আত্মত্যাগের ইতিহাস প্লান হয়ে পড়বে। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে মাতৃভাষার উন্নয়ন ও সংরক্ষন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন এবং ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি সংরক্ষণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট আইন, ২০১০ এর (৭) ও (৮) ধারার বিধান লংঘন হবে।
এর প্রতিবাদে আজ ২৭/ ০১/২০২১ইং রোজ বুধবার মানিকগঞ্জবাসী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি ডিসি মহোদয় নিকট প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ভাষা শহিদ রফিকের আপন ছোটভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম, পরিবারবর্গ আসলাম খান মজলিশ ফিরোজ, মোস্তফা কামাল, আব্দুর রউফ ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মানববন্ধনে একাত্ম প্রকাশ করে আরো যোগদান করেন ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন স্মৃতি পরিষদ, ভাষা আন্দোলন স্মৃতি রক্ষা পরিষদ, শব্বাশ মানিকগঞ্জ,বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট মানিকগঞ্জ, বাংলাদেশ ফোকলোর ফোরাম,মানিকগঞ্জ কল্যাণ সমিতি, ঢাকা মানিকগঞ্জ যুব সমিতি ঢাকা।