আবারো উৎপাত শুরু হয়েছে কথিত জ্বীনের বাদশাদের, এ যেন প্রতারণার এক লম্বা ইতিহাস। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় এই অপরাধ কার্য্যক্রমটি এখনো চলমান।
তথ্য সুত্রে জানা যায়, দরোবস্ত ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর, রামনাথপুর, ছোটো দূর্গাপুর, গোসাইপুর, বালুয়াহাট, বিশুবাড়ি প্রভৃতি এলাকার কতিপয় প্রতিষ্ঠিত দুষ্টচক্রের হাতে নিয়মিত প্রতারিত হয়ে আসছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।
এমনি একজন ভুক্তভোগী মো শাহিনুল আলম। যিনি নরসিংদী জেলার একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি। তিনি কিভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন তার একটি বিবরণী এসে পৌছেছে বিডিটোন২৪-এর হাতে।
তিনি বলেছেন, “এক ভোর রাতে অচেনা নাম্বার থেকে একটি ফোনকল আসে। বুঝতে পারলাম কথাগুলো কেমন এক বিশ্রী অস্পষ্ট ও প্রাণীসুলভ। ফোনকল থেকে বলা হচ্ছিল যে মুয়াজ্জিনের মোবাইল ফোন নিয়ে নাকি জ্বীন কথা বলছে।”
“এরপর বেশকিছু দিন কথা বলার পর আমি বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম যে সত্যিই আমি জ্বীনের সাথে কথা বলছি। কিন্তু এই বিশ্বাসের প্রতিক্রিয়া যে এতো কঠিন হবে তা কল্পনা করতে পারিনি। আজ আমি আমার পরিবার নিয়ে পথে বসেছি। আসলে সেটা জ্বীন ছিল না, বরং প্রতারণার এক অভিনব কৌশল।”
“আমাকে স্বর্ণের পুতুল দেয়ার কথা বলে নয় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে আমার পরিবারটাই ধ্বংস হয়েগেছে।”
আমাদের কথা হয়েছে, যিনি এক সময় এই প্রতারণা চক্রের সদস্য ছিলেন। নিরাপত্তার খাতিরে তার নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। তিনি অবশ্য এটাকে ‘প্রতারণা’ বলতে নারাজ বরং ব্যবসা বলতেই অভ্যস্ত।
তার ভাষায়, “আমাদের এলাকার দু’একজন ব্যাতিত প্রায় সবাই কোন না কোন এক সময় এই ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল বা আছে এবং এটা সবাই জানে…”
“এটা অনেক পুরনো। এর আদি গুরু ছিল মোজাহার ফকির। কিন্তু এটাকে মোবাইল ভার্সনে রুপ দেয় আজমল হোসেন, আর এজন্য যে কেউ এই ব্যবসা (প্রতারণা) সহজভাবে করতে পেরেছে।”
“সত্যি কথা বলতে, সম্পূর্ণ স্বর্ণের একটি পুতুল, এটা অসম্ভব। আসলে সীসা নির্মিত পুতুলের ওপর স্বর্ণের প্রলেপ দেয়া হয়।”
আমরা কথা বলেছিলাম সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সাথে। তারা এই ধরণের প্রতারণা কে গুরুতর অপরাধ বলে অবিহিত করেছেন। গোবিন্দগঞ্জ থানায় অসংখ্য প্রতারণা মামলার প্রমাণ মিলেছে। যার অনেক গুলো এখনো বিচারাধীন রয়েছে।