পবিত্র লাইলাতুল বরাত বা নিসফু শাবানকে আমাদের দেশে বলা হয় শবে বরাত। শবে বরাত মূলত একটি ফারসি বাক্য।যার মধ্যে শব শব্দের অর্থ রাত,বরাত শব্দের অর্থ মুক্তি। সুতারাং একবাক্যে বলা যায় মুক্তির রজনী।
আমাদের দেশের জনগণ শবে বরাত উল্লেখযোগ্যভাবে পালন করে। প্রাচীনকাল থেকেই বরাতের রাত ইবাদত ও গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়।প্রায় মসজিদে দলবদ্ধভাবে মুসল্লী এসে পালন করে শবে বরাত।
মসজিদে জিলাপি,বিরিয়ানি,খেজুর ও অন্যান্য তবারুক দেওয়া হয় মুসল্লীগনকে।অনেকে পুরা রাত ইবাদতে কাটান মসজিদে।
পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে শবে বরাত –
পবিত্র কুরআনের ৪৪ নাম্বার সুরা দুখানে উল্লেখ রয়েছে- “আমি একে অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রজনীতে,কেননা আমি মানুষকে সতর্ককারী” (আয়াত-০৩)
অধিকাংশ মুফাসসিরগন বলেন, এখানে বরকতময় রজনী বলতে শবে বরাতকে বুঝানো হয়েছে।যা রাসূল (স) নিসফু শাবান বা মধ্য শাবানের রাতকে উল্লেখ করেছেন।(তাফসীরে মাযহারি,রূহুল মায়ানী ও রূহুল বায়ান)।
এইছাড়া রাসূল (স) এর সুস্পষ্ট হাদিস দ্বারা শবে বরাতের প্রমান পাওয়া যায়। হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন – আল্লাহ তায়ালা শাবানের মধ্যবর্তী রাতে মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং শিরককারী ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান- ৫৬৬৫)( সুনানে ইবনে মাজাহ-১৩৯০)।
উক্ত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় আল্লাহ তায়ালা নির্দিষ্ট বান্দা ব্যতীত বাকি সকলকে ক্ষমা করে দেওয়ার সুসংবাদ দেন।তাই, মহান রাব্বুল আলামিনের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করার সুবর্ণ সুযোগ এই শবে রবাতের রজনী।
শবে রবাত উপলক্ষে রোজা,নামাজ,জিকির, কুরআন তেলোয়াত, দরুদ শরীফ,ইস্তেগফার,দোয়া-কালাম,তাসবিহ,এছাড়া নিজের জন্য দোয়া,পিতা-মাতার জন্য দোয়া,সর্বশেষ দেশ ও জাতির জন্য দোয়া করা কর্তব্য।