বান্দরবান বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত একটি পাহাড়ি জেলা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার এই জেলা। এখানে রয়েছে দেশের সুউচ্চ পাহাড় গুলো। এখানে আরো আছে মাতামুহুরি আর সাঙ্গুর মত নদী। এছাড়াও এখানে রয়েছে অসংখ্য জানা-অজানা ঝর্ণা এবং ঝিরিপথ যা এখানকার সৌন্দর্যকে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়।
প্রতিবছর সৌন্দর্য পিপাসুরা ছুটে আসে বান্দরবানে এসব নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য কিন্তু বান্দরবানের কিছু জায়গা আছে যেখানে জনসাধারণের যাওয়ার অনুমতি নেই। সেখানে আছে গহীন অরণ্য, যেখানে যুগ যুগ ধরে বাস করে আসছে আদিবাসীরা। তারা জীবিকার জন্য জুম চাষ করে থাকে। আর এসব পাহাড়ি গাছপালার উপর নির্ভর করে। তাদের পানির একমাত্র উৎস এসব ঝিরি।
আপনি যদি এসব গহীন অরণ্যে যান দেখতে পাবেন নির্বিচারে গাছ কাটার মহোৎসব আর পাথর চুরির হিড়িক যা এই পাহাড়িদের জন্য অশনিসংকেত আর তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। আপনি যদি এই পাহাড়ী পথ ধরে হাঁটতে থাকেন তবে দেখতে পাবেন সারি সারি কাটা গাছের স্তুপ। হাঁটতে হাঁটতে আমরাও দেখতে পাই এমন বন উজাড়ের দৃশ্য কিন্তু তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র থাকায় সরাসরি তাদের ছবি ধারণ করতে পারিনি। আমাদের দেখেই তারা থমকে দাঁড়ালো এবং উৎসুক চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকল তাই বাধ্য হয়ে কিছু দূর গিয়ে পাশ থেকে ছবি তুলতে হলো।
স্থানীয় আদিবাসীদের সাথে কথা বললে জানতে পারলাম এসবের মূল হোতা আমাদের সমতলের বাঙালিরা আর তাদের পাহাড়ি পাড়ার কারবারিরা যারা সামান্য কিছু টাকার জন্য নিজেদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলছেন।এসব বন উজাড় হলে জীবিকা ধারণ কঠিন হয়ে পড়বে আর পাথর বিলিন হয়ে গেলে তাদের পানির একমাত্র উৎস গুলোও হারিয়ে যাবে।
পাহাড়িরা হলো পাহাড়ের প্রান যদি তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে আমরা বিবেকের কাছে কি জবাব দিব? যেখানে আমরা ২৫ শতাংশ বনভূমির শর্তই পুরন করতে পারিনি সেখানে নির্বিচারে বন উজাড় কি বুঝায়?
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কি কোন দায়বদ্ধতা নেই?