কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসীদের দুটি পক্ষের মধ্যে আবার সংঘর্ষ হয়েছে। এতে গুলিতে নিহত হয়েছেন চার রোহিঙ্গা শরণার্থী। রাত ১০টা পর্যন্ত নিহত কারও পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এই আশ্রয়শিবিরে আগের দুই দিন—রবি ও সোমবার সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়েছেন আরও তিনজন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছুদ্দৌজা বলেন, রাত সোয়া নয়টা পর্যন্ত আশ্রয়শিবির থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চারজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। তখনো সেখানে সন্ত্রাসী দলগুলোর মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ চলছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে কাজ করছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ পর্যন্ত ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একজনের গলাকাটা ও অপর ৩ জন গুলিবিদ্ধ। এ ঘটনায় একজন আনসার সদস্য আহত রয়েছে। সংঘর্ষ এখনো চলমান রয়েছে।।কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম রাত ৯টায় চারজন নিহতের খবর নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে সংঘটিত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় এসব রোহিঙ্গা নিহতের প্রাথমিক খবর মিলেছে। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহতের সংখ্যা অর্ধশতাধিক বলে জানা গেছে। গোলাগুলিতে হতাহতের সংখ্যা আরো বেশী হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
নিহতদের মধ্যে মুন্না বাহিনীর প্রধান রোহিঙ্গা মুন্নার দুই ভাই মোহাম্মদুল্লাহ এবং গিয়াসুদ্দিন রয়েছে বলে জানা গেছে। গত বেশ কিছুদিন ধরে নতুন আসা রোহিঙ্গা এবং পুরানো রোহিঙ্গাদের মধ্যে সংঘাত চলে আসছে। তাদের এক গ্রুপে মুন্না বাহিনী এবং অপর গ্রুপে আনাস বাহিনী নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছে সাধারণ রোহিঙ্গারা। দুই গ্রুপের মধ্যে গত ছয় দিনে এক নারীসহ আট জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
উখিয়া থানার ওসি আহমেদ সঞ্জয় মোর্শেদ বলেন, গত রোববার রাতে কুতুপালং শিবিরে এই দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে দুই শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছিল। নিহত ব্যক্তিরা হলেন কুতুপালং ৩ নম্বর শিবিরের বাসিন্দা ইমাম শরীফ (৩৩) ও শামসুল আলম (৪৫)। তাঁরা দুজন সাধারণ রোহিঙ্গা।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আশ্রয়শিবিরের অভ্যন্তরে আধিপত্য বিস্তার, ইয়াবা ও স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ, শিবিরের তৈরি দোকানপাট থেকে নেওয়া চাঁদার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে মুন্না ও আসাদ বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ শরণার্থীরা বলেন, উভয় পক্ষে চার শতাধিক সন্ত্রাসী রয়েছে। সন্ত্রাসীদের অনেকের হাতে ভারী ও দেশীয় তৈরি বন্দুক দেখা যায়।