ঢাকা   বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ম্যাসেজ: আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া

শিল্প-সাহিত্য

প্রকাশিত: ১৩:৩৪, ৩ এপ্রিল ২০২১

আপডেট: ১৫:২৭, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

ম্যাসেজ: আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া

ম্যাসেজ: আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া ২০২১ সালের একুশে বইমেলায় বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক জনাব মিজানুর রহমান আযহারী এর প্রথম বই ‘ম্যাসেজ: আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া’এই শিরোনামে গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে, ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, আমি খুবই আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত, কারণ নিজেকে বাংলা সাহিত্য দুনিয়ায় যুক্ত করতে পেরেছি। যেভাবে শুরু হয়েছিল গল্পটা: গত সাত বছরের দাওয়াতি অভিযাত্রায় অনেক দ্বীনি ভাই-বোন তার কাছে লিখিত বইয়ের দাবি জানিয়েছেন। আলোচনা শোনার পাশাপাশি শ্রোতাদের বড়ো একটা অংশ পড়তে ভালোবাসেন। তা ছাড়া ইন্টেলেকচুয়াল সার্কেলে বই ও সাহিত্যের একটা আলাদা আবেদন আছে। সাহিত্যাঙ্গনে একজন দাঈ চাইলেই তার লেখালিখির মাধ্যমে স্থায়ী কিছু বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারেন। দাওয়াহর সাহিত্যিক প্রেজেন্টেশনও বেশ কার্যকর ও টেকসই। এই ভাবনাগুচ্ছ থেকেই তার লেখালিখির প্রাথমিক আগ্রহটা তৈরি হয়। তা ছাড়া গতবছর লকডাউনের সময়টাতে ফেসবুকে মাঝে মাঝে সময়সাময়িক বিষয়ে স্ট্যাটাস লিখতেন তিনি। এরই মাঝে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধু নতুন কিছু লিখতে অনুপ্রেরণা জোগান। একপর্যায়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন—বক্তব্যের পাশাপাশি দ্বীনি কথামালা ও ভাবনাগুলো জাতির কাছে সাহিত্যাকারে উপস্থাপন করার। নিম্নে বইয়ের সূচীপত্র তুলে ধরা হল: ১। কুরআনের মা, ২। মুমিনের হাতিয়ার, ৩। কুরআনিক শিষ্টাচার, ৪। উমর দারাজ দিল, ৫। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড, ৬। উসরি ইউসরা: কষ্টের সাথে স্বস্তি, ৭। রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন, ৮। শাশ্বত জীবনবিধান, ৯। স্মার্ট প্যারেন্টিং, ১০। মসজিদ: মুসলিম উম্মাহর নিউক্লিয়াস, ১১। ঐশী বরকতের চাবি, ১২। বিদায় বেলা সারা দেশে বিভিন্ন সময়ে তিনি থিমেটিক কিছু আলোচনা করেছেন; গ্রন্থের প্রতিটি লেখায় সেসব আলোচনার নোটই মূলত প্রাথমিক সোর্স। পরবর্তীতে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সন্নিবেশ শেষে নতুন আঙ্গিকে গ্রন্থটির জন্য সর্বমোট ১২টি স্বতন্ত্র বার্তা তৈরি করা হয়েছে। এই ১২টি বার্তা নিয়েই লেখনীর মূল এবং নতুন পথ-পরিক্রমা। প্রচ্ছদেই শোভা পাচ্ছে অনেক আকর্ষণীয় একটি নাম ‘You Have 12 Unread Messages’। লেখত তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের আলোকে উম্মাহর সামনে ১২টি ম্যাসেজ তুলে ধরেছি। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি পাঠক প্রতিউত্তরের। বইটিতে সব ধরনের বাহুল্য পরিহার করে সহজ-সাবলীল ভাষায় কথামালা উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে, যেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ পড়তে স্বস্তি অনুভব করে। বিশেষভাবে খেয়াল নজর দেয়া হয়েছে তরুণ ও কনভেনশনাল শিক্ষায় শিক্ষিত লোকজনের বোধ উপযোগী করে তুলতে। সকল ধর্ম, বয়স, শ্রেণি-পেশার পাঠক নিজেদের সাথে বইটিকে সংযুক্ত করতে পারবেন বলে লেখক দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করেন। লেখক অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে একপর্যায়ে বলেন, আদতে আমি লেখক নই; বলাটাই আমার স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা। তবে আমি আমার মতো করে চেষ্টা করেছি। জনাব মিজানুর রহমান আযহারী আরও বলেন, বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের নিকট ইসলামের মূল তাৎপর্য, সৌন্দর্য, স্পিরিট ও মধ্যমপন্থার শিক্ষা তুলে ধরতে বইটি কিছুটা হলেও অবদান রাখবে বলে আশা করছি । আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া লাগাতে বইটিকে আল্লাহ তায়ালা কবুল করুন। তিনি কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বলেন, আমি কৃতজ্ঞ প্রতিশ্রুতিশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সকে পাশে পেয়ে। পুরো গার্ডিয়ান টিম দুর্দান্ত পরিশ্রম করেছে। আল্লাহ তায়ালা তাদের উত্তম বিনিময় দিন। এদিকে গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সের পরিচালকসহ অন্যরা বলেন, তারা এমন একটি আকর্ষণীয় বইয়ের কপি মেইলে পাওয়ার সাথে সাথে সকল ক্লান্তি ভুলে নিরলস কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন। কষ্টের সেই সার্থকতা বইমেলায় পাবেন বলে তারা প্রত্যাশা করেন। বইয়ের ফ্ল্যাপ তুলে ধরা হল: ইসলাম এক নক্ষত্র, যার সংস্পর্শে সমস্ত আঁধার বিলীন হয়ে যায়, ঘোর অমানিশাও তাতে নিজেকে সঁপে দিয়ে আলোকোজ্জ্বল হয়। ইসলাম তো এমন এক জ্যোতিষ্ক, যা উৎসারিত হয়েছে আরশে আজিমের মহিমান্বিত রওশন থেকে। জাহেলিয়াত পরাজয় কবুল করেছিল ইসলামের বুকে আশ্রয় পেয়ে। এই পবিত্র দ্বীন আত্মাকে করেছে প্রশান্ত, চরিত্রকে করেছে নিষ্কলুষ, জীবনকে করেছে সার্থক, মানবতাকে দিয়েছে মুক্তি। এর আলোকচ্ছটা যে জমিনে পড়েছে, সেখানে অঙ্কুরিত হয়েছে শান্তির সবুজ তরু। এই রওশনের ঝলক যে হৃদয় ধারণ করেছে, সে হৃদয় হয়েছে দারাজ দিল। যে যুগ ধারণ করেছে, তা হয়েছে খইরুল কুরুন বা সর্বোত্তম যুগ। কিন্তু হায়! অজ্ঞতা ও অবহেলার কালো মেঘে সেই সূর্য আজ মেঘ লুপ্ত। আলোহীন এ ধরায় উঠে না প্রাণের জোয়ার। তোলে না কেউ আর মানবতার জয়োধ্বনি। অধিকার হারিয়ে মুমূর্ষুপ্রায় মানবতা। নব্য জাহেলিয়াতের এই গাঢ়-কালো মেঘপুঞ্জ চুর্ণ করতে দরকার একটি নির্ভেজাল ঈমানি দমকা হাওয়া; যে হাওয়ায় জ্ঞানের সৌরভ মিশে মোহিত করবে প্রতিটি হৃদয়। সেই মোহনীয় দক্ষিণা হাওয়ার গুঞ্জন তুলতেই আমাদের আয়োজন-‘ম্যাসেজ’।