সীমান্ত সুরক্ষার মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী-শিশু এবং মাদক পাচার রোধে সীমান্তে নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে বিজিবি।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-২০২১’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিজিবি দিবস-২০২১ উপলক্ষে আমি এই বাহিনীর সব সদস্যকে জানাই, আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বীরত্ব ও ঐতিহ্যে গৌরবমণ্ডিত ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ বিজিবির রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস। মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর রয়েছে অবিস্মরণীয় অবদান।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকার পিলখানাস্থ তৎকালীন ইপিআর সদরদপ্তর আক্রমণ করে। ইপিআর সদরদপ্তর থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা ওয়্যারলেসযোগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ এবং বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফসহ এই বাহিনীর ৮১৭ জন অকুতোভয় সদস্য আত্মোউৎসর্গ করে দেশপ্রেমের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে গৌরবময় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই বাহিনীকে ২০০৮ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশমাতৃকার প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় বিজিবির যে সব সদস্য আত্মত্যাগ করেছেন, আমি তাদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করছি।
তিনি আরও বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানসহ দুর্যোগকালীন উদ্ধার কার্যক্রমেও বিজিবির ভূমিকা প্রশংসার দাবিদার। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিজিবিকে একটি বিশ্বমানের আধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
অত্যাধুনিক এমআই-১৭১-ই প্রযুক্তির দু’টি হেলিক্যাপ্টার, আধুনিক জলযান, আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি), রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যাল ও এটিভিসহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সংযোজনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বিজিবিকে ত্রি-মাত্রিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন ২০১০ প্রণয়ন ও ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১’ পরিকল্পনা গ্রহণের ফলে এ বাহিনীর সার্বিক কর্মকাণ্ডে গতি সঞ্চারিত হয়েছে। সরকারের এসব পদক্ষেপ বিজিবির অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা ও তার যথাযথ বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে উন্নয়ন আর অগ্রযাত্রার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এই অগ্রযাত্রায় বিজিবিও তার অবস্থান হতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে।
দেশের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বিজিবির সব সদস্য সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন- এটাই সবার প্রত্যাশা।