সমালোচনার মুখে সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত ‘বিতর্কিত ব্যক্তি’ মো. আমির হামজাকে বাদ দিয়ে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) পুরস্কারপ্রাপ্তদের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নয় ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে এবার স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে ক্ষেত্রসহ পুরস্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকাও প্রকাশ করা হয়।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় গত ১৫ মার্চ ১০ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে সরকার।
এতে সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয় প্রয়াত আমির হামজাকে। অচেনা এই ব্যক্তিকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননায় ভূষিত করায় অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, আমির হামজা একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মাগুরার শ্রীপুরে গড়ে ওঠা শ্রীপুর বাহিনীর একজন সদস্য। তার উল্লেখযোগ্য তিনটি বই হচ্ছে ‘বাঘের থাবা’, ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব’ এবং ‘একুশের পাঁচালি’। তার এই তিনটি বই প্রকাশিত হয়েছে যথাক্রমে ২০১৮, ২০২০ এবং ২০২১ সালে।
আমির হামজার বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরিশাট গ্রামে। স্থানীয়দের কাছে তিনি পালাগানের শিল্পী এবং কবি হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৮ সালে (গরু খেতের ফসল খেয়ে ফেলে) মো. শাহাদাত হোসেন নামে এক ব্যক্তি খুন হন।
আমির হামজা ওই মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। আট বছর জেল খাটার পর ১৯৯১ সালের মাগুরার এক মন্ত্রীর সহায়তায় তিনি বেরিয়ে আসেন। সর্বশেষ ২০০৭ সালেও স্থানীয় একটি গ্রাম্য মারামারির ঘটনায় তিনি আসামি ছিলেন।
মূলত সরকারের উপসচিব মো. আসাদুজ্জামান তার সাহিত্যিক বাবার (আমির হামজা) নাম স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছেন। এতে সমর্থন দিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
আমির হামজার ছেলে আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন, তার বাবা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন।