ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি চক্রের প্রধান আসামি গোলাম মোস্তফাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি বেশকিছু রোহিঙ্গা একশ্রেণির অসাধু চক্রের মাধ্যমে ভুয়া এনআইডি কার্ড পায়। এছাড়া কয়েকজন জঙ্গি সদস্য আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে ভুয়া এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরি করে বিভিন্ন দেশে গমন করতো নানা অপকর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সেই দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বেশকিছু পলাতক আসামি গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। সেখানে দেখেছি তারা নিজেদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য ভিন্ন নামে ভুয়া এনআইডি কার্ড তৈরি করে অন্যত্র বসবাস করছে। আপনারা দেখেছেন সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঘাতক পরিবহনের চালকদের গ্রেফতারে দেখেছি তাদের অনেকেই অপরিপক্ব চালক এবং তারা ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করে পরিবহন চালাচ্ছে।
প্রসঙ্গত গত বছরের নভেম্বরে সিটি করপোরেশনের গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান নটর ডেম কলেজের এক শিক্ষার্থীর। ময়লার গাড়ির ধাক্কায় পরপর মৃত্যু হয় কয়েকজনের। পরে জানা যায় চালকদের ছিল না কোনো বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর দেশে যত মানুষ মারা যায় তার মূল কারণ চালকদের অদক্ষতা। রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করেছে তাদের। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করে দিত।
চক্রের প্রধান আসামি মো. গোলাম মোস্তফাসহ গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. জালাল বাশার, মো. মুসলিম উদ্দিন, মিনারুল ইসলাম (মিন্নি) এবং তারেক মৃধা। তাদের কাছ থেকে দুটি কম্পিউটার, দুই হাজার ৪৬০টি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের জাল প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ, ২৬টি ভুয়া এনআইডি, ১৮টি ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, ৮০টি সাদা রঙের প্লাস্টিকের ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরির ব্ল্যাঙ্ক কার্ড, ৫০টি স্বচ্ছ কার্ড হোল্ডার, দুই রিল সিকিউরিটি লেমিনেটিং পেপার (যা দিয়ে জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা যায়), একটি করে ল্যাপটপ ও ডিজিটাল ক্যামেরা, একটি কার্ড প্রিন্টার, চারটি করে সফ্টওয়্যারের সিডি ও পেনড্রাইভ, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও নগদ ২৮০০ টাকা।
এ চক্রের সঙ্গে কোনো অসাধু কর্মকর্তা জড়িত আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সরকারি কোনো অসাধু কর্মকর্তা জড়িত নেই। তবে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি কিছু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা জড়িত রয়েছে।