শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে দোষারোপ করে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, সেটিকে অনভিপ্রেত, অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং রুচিবিবর্জিত বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়েরের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
এর আগে সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংবাদ সম্মেলন করে নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ নিজের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এসব অভিযোগ ও ইউজিসির ‘এমন তদন্ত’ শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির আশ্রয়–প্রশ্রয় ও আশকারায় হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর আশকারায় পরিস্থিতি এ অবস্থায় এসেছে বলেও অভিযোগ করেন অধ্যাপক কলিমউল্লাহ।
এর জবাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, বেরোবিতে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসিকে তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছিল। ইউজিসি তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। ইউজিসি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এ প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়ে মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রভাব বিস্তারের কোনো সুযোগ নেই এবং এ সংক্রান্ত জনাব নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ সাহেবের অভিযোগ অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
মন্ত্রণালয় বলেছে, জনাব কলিমুল্লাহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের যে সভায় মন্ত্রীর দেরিতে উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ তুলেছেন সেটি গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও পরে সভাটির সময় পরিবর্তন করে বিকালে নেওয়া হয়। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের অভিন্ন ন্যূনতম নির্দেশিকা প্রণয়ন সংক্রান্ত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সভা থাকায় উপাচার্যদের সঙ্গে সভার সময় পরিবর্তন করা হয়েছিল। সভাটি নির্ধারিত সময়ের চেয়েও দেরিতে শেষ হওয়ায় অনিচ্ছাকৃত বিলম্বের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়। অনিচ্ছাকৃত এই বিলম্ব নিয়ে কলিমুল্লাহ যে বক্তব্য রেখেছেন তা শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনকই নয় নিতান্তই রুচি বিবর্জিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনার জন্য শিক্ষামন্ত্রী বাণী না দেওয়ার অভিযোগের ব্যাপারে মন্ত্রণালয় বলেছে, একটি প্রকাশনার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর বাণী একবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাওয়া হয়েছিল। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বড় ধরনের ছাত্র আন্দোলন চলছিল। ওই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী বাণী দেওয়া সমীচীন মনে করেননি। এরপর বিগত এক বছরে মন্ত্রীর কাছে আর কোনো বাণী চাওয়া হয়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আরও বলা হয়, এসব বিষয়ের বাইরেও শিক্ষামন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার কথা উল্লেখ করে রাজনীতিকে জড়িয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন যার সাথে মন্ত্রণালয়ের কোনো বিষয়ের কোন ধরনের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছে। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে যে বক্তব্য রেখেছেন সেসব বিষয়ে এ মুহূর্তে মন্ত্রণালয় মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে শিগগির মন্ত্রণালয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের সভা হবে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে আরেকটি অভিযোগের তদন্ত চলছে। কলিমউল্লাহর সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া অন্যান্য সব বক্তব্য সম্পর্কে মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন পাওয়ার পর যথাযথ প্রক্রিয়ায় বক্তব্য উপস্থাপন করবে।