স্পর্শিয়া
নিজের জন্মদিনে ‘মরণোত্তর দেহদান’ করার ঘোষণা দিয়েছেন অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া। এক সপ্তাহ আগেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছেন তিনি।
হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত- এমন প্রশ্নে স্পর্শিয়া বলেন, আমি আসলে নিজেকে কাজে লাগাতে চাই। জন্ম নিলাম, বাঁচলাম, মরে চলে গেলাম- এটা চাই না। আমি নিজেকে ব্যবহার করতে চাই।
এই অভিনেত্রী আরো বলেন, আমি আসলে কেন জন্ম নিয়েছি, কেন বেঁচে আছি, আমার মৃত্যু কি শুধুই একটা মৃত্যু হবে? এসব চিন্তা থেকেই সিদ্ধান্ত নেয়া। আমি মৃত্যুর পরেও কারো উপকারে আসতে চাই। বেঁচে থেকে মানুষের কতোটুকু উপকারে আসতে পেরেছি জানি না, তবে চেষ্টা করেছি মারা যাওয়ার পরে যেন কারো উপকারে আসতে পারি।
কারো অনুপ্রেরণায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে স্পর্শিয়া বলেন, কারো অনুপ্রেরণায় নয়, তবে কোথাও আমি অবশ্যই শুনেছি, এ বিষয়ে তথ্য পেয়েছি। সেই জায়গা থেকে মনে হয়েছে আমি নিজেকে মৃত্যুর পরেও কাজে লাগাতে পারি।
স্পর্শিয়ার ভাষায়, যতটুকু মনে আছে একটি ওয়েব সিরিজে আমি এমন কিছু দেখেছিলাম। সেটা দেখে আরো অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। তখনই আমার মনে হয়েছিল এটা করি। আমার গত বছরের জন্মদিনে এটা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য ও গবেষণা ছিল না। গত এক বছর ধরে যতটুকু সম্ভব ধর্মীয় জ্ঞান নেওয়া, গবেষণা করা, বাংলাদেশের আইনে এটার নিয়ম কানুন বিষয়ে জেনেছি। তারপরই সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করেছি।
নিজের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে পরিবারের অনুমতি নিয়েছেন জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, আমার আম্মুর ধর্মীয় জায়গা থেকে একটু প্রশ্ন ছিল, তবে তাকে যখন ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকেই বিষয়টি জানালাম, এটা করলে পাপ হয় না। তখন তিনি অনুমতি দিয়েছেন।
এর আগে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে স্পর্শিয়া লেখেন, আজ আমার ত্রিশতম জন্মদিনে বাংলাদেশের মানুষদের জন্য, আমার মায়ের অনুমতি নিয়ে, বাংলাদেশের আইন মোতাবেক ও ধর্মীয় পরিপূর্ণ জ্ঞান নিয়ে, আমি অর্চিতা স্পর্শিয়া সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায়, কারো দ্বারা প্ররোচিত না হইয়া, আমার মৃত্যুর পর আমার চক্ষু ও দেহ মানব উপকারে ও চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণার কাজে বাংলাদেশ সরকারকে দান করিয়াছি। কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপনে কারো জীবন বাঁচুক। কারো চোখ আলো পাক। সবার কাছে সুন্দর জীবন ও স্বাভাবিক মৃত্যুর দোয়া কামনা করছি। আগামীর পথ সহজ কাটুক, ভালোবাসায় কাটুক, দোয়ায় রাখবেন।