ঢাকা   বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পোকা থেকে খাবারের রঙ

ফিচার

প্রকাশিত: ১৫:৩৪, ২২ ডিসেম্বর ২০২১

আপডেট: ১৯:১৯, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পোকা থেকে খাবারের রঙ

আমরা প্রতিনিয়ত এমন কিছু খাবার খাই কিংবা এমন কিছু পণ্য ব্যবহার করি, যেসব তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এক ধরনের পোকা! রেড ভেলভেট কেকের কথাই ধরা যাক। নামটি শুনলেই অনেকের জিবে জল এসে যায়। এই কেকের লাল রং তৈরি হয় একধরনের পোকা বা কীট থেকে! গা গুলিয়ে উঠল? তাহলে শুনুন, মুখরোচক আরও অনেক ধরনের খাবার, যেমন চকলেট, আইসক্রিম, দই, জেলি, জুস, ডোনাট তৈরিতেও যে রং ব্যবহৃত হয়, তা আসে মূলত এক বিশেষ পোকা থেকে। শুধু খাবার নয়, লিপস্টিক, আইশ্যাডো, শ্যাম্পু, লোশনের মতো প্রসাধনে ব্যবহৃত রংও আসে ওই পোকা থেকে! খাবার ও প্রসাধনসামগ্রীতে ব্যবহৃত সবচেয়ে জনপ্রিয় লাল রঙের নাম কারমাইন। এটি মূলত কোচিনিয়েল বা কোচিনিল নামে একধরনের পোকাকে পিষে প্রস্তুত করা হয়। বিশ্বব্যাপী কারমাইনের অসম্ভব চাহিদার কারণে লাতিন আমেরিকায়, বিশেষত পেরুতে বিশাল অঞ্চলজুড়ে কোচিনিয়েলের চাষ করা হয়। বিশ্বে কারমাইনের মোট জোগানের ৯৫ শতাংশই আসে এই দেশ থেকে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যশিল্পে কারমাইনের অত্যধিক চাহিদা। দই, ফল থেকে তৈরি পিঠা, কোমল পানীয়, কেক, ডোনাটে এই রং ব্যবহার করা হয়। কারমাইনের জনপ্রিয়তার মূল কারণ হচ্ছে, এই রং সহজে নষ্ট হয় না। দীর্ঘদিনে, এমনকি কড়া রোদেও এটি খাবারের স্বাদে কোনো পরিবর্তন আনে না। ৫০০ বছরের বেশি আগে খাবারের এই রং ব্যবহারের শুরু। অনেকে মনে করেন, কৃত্রিম রঙের চেয়ে এটি অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত। কিন্তু অনেকে মনে করেন, যেসব পণ্যে কারমাইন ব্যবহার করা হয়, সেসব পণ্যের গায়ে সেটি স্পষ্ট করে লেখা থাকা উচিত। বেশির ভাগ সময়ই পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি ‘কারমাইন’ না লিখে ‘প্রাকৃতিক লাল রং’, ‘ক্রিমসন লেক’, ‘ই১২০’, ‘প্রাকৃতিক রং’ ইত্যাদি লেখে। আবার এখন বিভিন্ন প্রাকৃতিক উৎস থেকেও এমন রং সংগ্রহ করা যায়, যা খাবারে ব্যবহারযোগ্য এবং যেগুলোর সঙ্গে কোনো পোকা বা কীটের সম্পর্ক নেই। যেমন বিটানিন নামে যে খাবারের রং ব্যবহৃত হয়, সেটি তৈরি হয় বিটের মূল থেকে। সূত্র: লাইভ সায়েন্স, সায়েন্স ডিরেক্ট ও ডিএক্স