দেশে শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ অংশ হোস্টেল/মেস আর হলে থেকে পড়াশোনা করেন। করোনার কারণে দেড় বছরের বেশি সময়ের সাধারণ ছুটি শেষে খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আর তার আগেই চেনামুখ নিয়ে চালু হচ্ছে হল ও হোস্টেলগুলো। দীর্ঘ ছুটি পর শিক্ষার্থীদের জন্য হোস্টেলে ফিরে নতুন করে খাপ খাওয়ানোর বিষয়টা কিছুটা চ্যালেঞ্জের। অনেকে আবার সেই চ্যালেঞ্জে সহজভাবে উতরে যেতে মুখিয়ে আছেন। তবে হোস্টেললাইফ গুছিয়ে পরিপাটি রাখলে খাপ খাওয়াতে আর বেগ পেতে হবে না। আসলে নিজের ঘরে যেভাবে থাকেন, হোস্টেলেও সেভাবেই গুছিয়ে থাকলেই হয়। কীভাবে দীর্ঘ সময় পর হোস্টেললাইফে ফিরে সেই আবহ ও টিপটপ রাখবেন, তার কিছু ধারণা দেওয়া হলো।
হোস্টেল/মেস বা হলে ফিরে আগে সবকিছু পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন আর জীবাণুমুক্ত করুন। হোস্টেল বা হলে ভাগাভাগি করে নিজের যেটুকু জায়গা থাকে, এর একটা বড় অংশজুড়ে থাকে বিছানা। আমরা যতক্ষণ হল বা হোস্টেলে থাকি, এর বেশির ভাগ অংশ সময় কাটে বিছানায় শুয়ে–বসে বই হাতে। এ ক্ষেত্রে বিছানার চাদর নির্বাচনে সচেতন হতে হবে। পছন্দের কোনো রঙের চাদর বিছাতে পারেন। আর উজ্জ্বল রং আপনার মন প্রফুল্ল রাখবে। ১৫ দিন পরপর চাদর ধুয়ে ফেলুন। একাধিক পরিষ্কার চাদর সংগ্রহে রাখুন। পর্দার রংও প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ। পর্দার কাপড় এমন হওয়া উচিত, যাতে দিনের বেলায় টেনে নিয়ে দিব্যি রোদ আটকে খানিক ঘুমিয়ে নেওয়া যায়। হোস্টেলজীবনে রাত জেগে পড়াশোনা করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার অভ্যাস তো আমাদের অনেকেরই আছে।
প্রতিদিন নানা কারণে বাইরে যেতে হয়। হোস্টেলে ফিরেই পরিহিত পোশাকটি সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে ফেলুন। একান্তই ধুয়ে ফেলা সম্ভব না হলে হালকা রোদ মেলে দিন। ময়লা কাপড় না জমিয়ে কেচে ফেলতে হবে। । আর সঙ্গে সঙ্গে কেচে না ফেললে ময়লা, কাপড়ে স্থায়ী হয়ে যাওয়ার, কাপড় ঠিকমতো পরিষ্কার না হওয়ার, এমনকি কাপড় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কাপড় রাখার জন্য সিঙ্গেল আলমারি (কাঠ, প্লাস্টিক, হার্ডবোর্ড) ব্যবহার করুন। কাপড়ের ভাঁজে ভাঁজে ন্যাপথলিনের টুকরা রেখে দিন। ব্যবহৃত মুঠোফোন, ল্যাপটপ ও ইয়ারফোনের যত্ন নিন। মুঠোফোন ও ল্যাপটপে চার্জ দেওয়া শেষ হয়ে গেলে চার্জার খুলে গুছিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখুন। সে ক্ষেত্রে টেবিলের ড্রয়ার ব্যবহার করতে পারেন।
হোস্টেললাইফের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো পড়ার টেবিল। পড়ার টেবিলের ক্লথ নির্বাচনের ক্ষেত্রে হালকা রং বেছে নিন। হালকা রং মনে প্রশান্তি আনে। এতে পড়ায় মনোযোগ রাখা সহজ হয়। কটকটে রং হলে বারবার আপনার মনোযোগ বিঘ্নিত হতে পারে। টেবিলে বইয়ের সংখ্যা বেশি হয়ে গেলে একটি সিঙ্গেল বুকশেলফ ব্যবহার করতে পারেন। রুমের এককোণে শেলফটি রেখে অতিরিক্ত বইগুলো সাজিয়ে রাখুন। রুমে জায়গার সংকট হলে ওয়াল বুকশেলফ ব্যবহার করুন। তাতে পড়ার জায়গাটা ঘিঞ্জি দেখাবে না।
হোস্টেলে যাঁরা বসবাস করেন, তাঁদের অনেকেই বলতে শুনি ‘খাটের নিচে সংসার’। এই ‘খাটের নিচে সংসার’ বড় করা যাবে না। অতিরিক্ত জিনিস রাখবেন না। যেটা একান্তই প্রয়োজন, না হলেই নয়, কেবল সেটাই কিনবেন। তাতে বাকি জীবনের পথচলাও সহজ হয়ে যাবে। পড়ার টেবিলে একটি রঙিন স্বচ্ছ আলপনা আঁকা বোতলে আপনার পছন্দমতো একটি গাছ রেখে দিতে পারেন। বারান্দা বা জানালায়ও ঝুলিয়ে দিতে পারেন কিছু গাছ।