
নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিলের পরবর্তী শুনানি ২১ জানুয়ারি
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিল শুনানি আজ দ্বিতীয় দিনের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি শেষে ২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
শুনানিতে জামায়াতের আইনজীবীরা বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের রিট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল।
গত ২২ অক্টোবর রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করে আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। এর ফলে নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াই করার পথ খুলে যায়।
এর আগে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খারিজ হওয়া আপিলটি পুনরুজ্জীবিত (রেস্টর) করার আবেদন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরবর্তীতে হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী।
তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় গত নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল খারিজের আদেশ দেন। ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল থাকে।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আপিল বিভাগে পেন্ডিং মামলাটি পূর্ণাঙ্গ শুনানি হয়ে নিষ্পত্তি হয় নাই। 'ডিসমিসড ফর ডিফল্ট' হয়েছে। সেজন্য আমরা মামলাটি পুনরুজ্জীবনের আবেদন করি। রেস্টর আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর মেরিট অনুযায়ী আজ শুনানি শুরু হল। সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে যদি আমাদের আপিল অ্যালাউ হয় তখন আমরা নিবন্ধন ফিরে পাব। দলীয় প্রতীক ফিরে পাব। একইভাবে নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাওয়ার মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচনগুলোর যখন আয়োজন হবে তখন জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসেবে অংশগ্রহণ করতে কোন আইনগত বাধা থাকবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে শেখ হাসিনার সরকার। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারায় জামায়াত, ছাত্রশিবিরসহ তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে গত ২৮ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
তিনি বলেন, দেশে ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালীন গত ১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে দেশে জামায়াত ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার।
বিগত সরকারের ওই সিদ্ধান্তের পুনঃবিবেচনা চেয়ে আমরা নতুন সবকারের কাছে আবেদন করি। তারা বিষয়টি আমলে নেয়। এই বিষয়ে গত ২৮ আগস্ট নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।