ঢাকা   বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জার্মান ভিসা: অ্যাপয়েন্টমেন্ট টু ভিসা প্রাপ্তি

বৃত্তি ও উচ্চ শিক্ষা

প্রকাশিত: ১১:২২, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১

আপডেট: ১৯:৪৬, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জার্মান ভিসা: অ্যাপয়েন্টমেন্ট টু ভিসা প্রাপ্তি

প্রিয় জার্মান ভিসা প্রত্যাশী ভাই ও বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজকে আমি নতুনদের জন্য লিখছি। আশা করি লেখাটি পড়ে নতুনরা অনেক কিছু ক্লিয়ার হবেন। জার্মান এম্বাসীতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট রেজিস্ট্রেশন করবেন কবে? উত্তরঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের পরে মুটামুটি কনফার্মেশন পেলে বা অফার লেটার পেলেই জার্মান এম্বাসীতে অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য রেজিস্ট্রেশন করবেন। যদিও অফার লেটার ছাড়াই রেজিস্ট্রেশন করা যায়! অনেকে ওয়েটিং পিরিয়ড বেশী জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করার আগেই এম্বাসীতে অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য আবেদন করেন। এটা মোটেই উচিত নয়। এই একটা বাজে প্র্যাকটিসের জন্য এখন অনেকে ফাইনাল সেমিস্টারে পড়েও ভিসা জটিলতায় ভুগতেছে। যদিও বর্তমান ভিসা জটিলতার জন্য শুধুই এই প্র্যাকটিস দায়ী নয়! অফার লেটার ছাড়াই রেজিস্ট্রেশন করতে চাইলে এমন টাইমে করবেন যখন আপনি হয়তো কিছু দিনের মধ্যেই অফার লেটার পাবেন এমন সম্ভবনা থাকে। আপনি যখনই রেজিস্টেশন করুন না কেন সেটা আপনার নিজ দায়িত্বে করে নিতে হবে। কারণ আপনি যদি অফারলেটার পাবার পূর্বেই এম্বাসী থেকে ডকুমেন্ট সাবমিটের মেইল পেয়ে যান আর তা সাবমিট না করতে পারেন তাহলে আপনি নানা রকম জটিলতায় পরতে পারেন। অনেক সময় পাসপোর্ট কিছুদিনের জন্য তারা ব্লকও করে দিতে পারে! জার্মান এম্বাসীতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট রেজিস্ট্রেশন করবেন কিভাবে? উত্তরঃ প্রথমে গুগলে গিয়ে সার্চ করুন German Embassy Dhaka অথবা এম্বাসীর লিংকে সরাসরি চলে যাবেন এই ঠিকানায়, https://dhaka.diplo.de/bd-en তারপরে ওয়েবসাইটের টপ-রাইটে Services থেকে সিলেক্ট করুন Make an Appointment এখানে কিছু নির্দেশনা দেয়া আছে। আপনি স্টুডেন্ট ভিসার জন্য "Please schedule your appointment here in our online booking system" ক্লিক করলে আপনাকে নতুন একটি ওয়েব সাইটে নিয়ে যাবে যার নিচের দিকে বাম সাইডে Continue আছে এটায় ক্লিক করলে আপনাকে ক্যাটাগরি সিলেক্ট করতে বলবে। ক্যাটাগরি সিলেকশনঃ এখানে প্রথম ক্যাটাগরিটি ফ্যামিলি/জব হোল্ডারদের জন্য। Continue ক্লিক করে পরের স্টেপে যাবেন। নির্দেশনা পড়া শেষে নিচে ডান সাইডে New Appointment ক্লিক করে ডিটেইলস ইনফরমেশন দিয়ে Submit করলে মেইলে কনফার্মেশন পাবেন। যেখানে সিরিয়াল নাম্বার ও মেইল আইডি থাকবে। এটা রেখে দিন, সময় মত ডাক আসলে এই মেইলেই সব ইনফর্মেশন চলে আসবে। দ্বিতীয় ক্যাটাগরিটি সাধারণ স্টুডেন্ট/স্কলারশীপ হোল্ডার/পিএইচডি/বিজ্ঞানীদের জন্য। Continue ক্লিক করে পরের স্টেপে যাবেন। নির্দেশনা পড়া শেষে নিচে ডান সাইডে New Appointment ক্লিক করে ডিটেইলস ইনফরমেশন প্রদানের পেজে যথাযথ ইনফরমেশন দিয়ে Submit করলে মেইলে কনফার্মেশন পাবেন। ড্রপডাউন মেনুতে আপনার ক্ষেত্রে যা প্রযোজ্য নয় তা Not Applicable সিলেক্ট করুন। সাবমিশনের পরে মেইলে সিরিয়াল নাম্বার ও মেইল আইডি সহ একটা মেইল পাবেন। এটা রেখে দিন, সময় মত ডাক আসলে এই মেইলেই সব ইনফর্মেশন চলে আসবে। নোটঃ সকল ইনফরমেশন ল্যাটিন অক্ষরে লিখতে হবে। পাসপোর্ট নাম্বার লিখতে সব ক্যাপিটাল অক্ষরে লিখতে হবে এবং কোন স্পেস দেয়া যাবে না। উদাহরণঃ BN050505 ব্লক করবেন কবে? কত টাকা? কোথায়? উত্তরঃ যাদের সুযোগ আছে তারা চাইলে অফার লেটার পাবার পরেই ব্লক করে রাখতে পারেন। যাদের ফাইন্যান্সিয়াল প্রবলেম তারা ব্যাংকে স্টুডেন্ট ফাইল খুলে রাখবেন এবং নজর রাখবেন কখন আপনার পূর্বের মাসের (অ্যাপয়েন্ট রেজিস্ট্রেশনের মাস) লোকজন ডকুমেন্ট সাবমিটের মেইল পায়, তখনই আপনি ব্লক করে ফেলবেন। ব্লকের জন্য বর্তমানে একাউন্টে কমপক্ষে ১০,৩৩২ ইউরো রাখতে হবে। ব্যাংকে ব্লক করতে গেলে সেদিনের ইউরো রেট এর সাথে সার্ভিস চার্জসহ টোটাল টাকা পেমেন্ট করতে হবে। দেশের বেশ কিছু ব্যাংকের মাধ্যমে ব্লকের টাকা পাঠানো যায়। যেমন- সোনালী ব্যাংক, ইবিএল, সিটি ব্যাংক ইত্যাদি। এছাড়া বিদেশে আত্মীয়-স্বজন থাকলে তারাও সেখানে থেকে টাকা পাঠাতে পারে। তবে জার্মানিতে যে থার্ডপার্টির মাধ্যমে টাকা ব্লক করবেন তাতে আগেই একাউন্ট খুলে তা ভেরিফাই করে রাখে হবে। থার্ডপার্টি যেমনঃ ফিন্টিবা, এক্সপ্যাট্রিও ইত্যাদি। ব্লকের টাকা পাঠানোর পরে অপেক্ষা করবেন এম্বাসী থেকে ডকুমেন্ট সাবমিটের মেইলের জন্য। বর্তমানে অ্যাপয়েন্টমেন্ট রেজিস্ট্রেশনের পরে সাধারণত ১২ মাসের ওয়েটিং পিরিয়ড থাকে। তবে সিচুয়েশনের উপর নির্ভর করে তার আগে/পরে পেতে পারেন! আপনি কবে মেইল পেতে পারেন তার ধারণা গ্রুপের বিভিন্ন পোস্টেই পাবেন যদি আপডেট থাকেন। ডকুমেন্ট সাবমিশনঃ এম্বাসী থেকে ডকুমেন্ট সাবমিশনের মেইল পাবার পরে ভিসা ফর্ম (ভিডেক্স, https://videx-national.diplo.de/videx) পূরণ করে চেকলিস্ট অনুযায়ী সকল ডকুমেন্ট সাজায়ে সেগুলো পিডিএফ করতে হবে। তারপরে মার্জ করে একটি ফাইল বানায়ে সেটা ১০ মেগাবাইটের কম একটি ফাইল বানাতে হবে। সব ডাবল চেক করে মেইলের ঠিক রিপ্লাইতে সিম্পল কিছু লিখে পিডিএফ ডকুমেন্টটি এটাচ করে সাবমিট করতে হবে। গুগলে গেলেই পিডিএফ মার্জ ও সাইজ রিডিউসের অনেক সোর্স পাবেন। ডকুমেন্ট সাবমিটের কিছুদিন পরেই ইন্টারভিউ এর ডাক পাবেন। ভিসা ইন্টারভিউঃ ইন্টারভিউয়ের ডাক পেলে ঢাকাস্থ জার্মান এম্বাসীতে যথা সময়ে চেকলিস্টে উল্লেখিত সকল ডকুমেন্ট নিয়ে যেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লগিন করার সব আইডি/পাসওয়ার্ড সাথে নিয়ে যাবেন! অনেক সময় তারা পোর্টালে লগিন করতে চাইতে পারে। ইন্টারভিউতে সাধারণত ছোট ছোট প্রশ্ন করে থাকে এবং অল্প সময় নেয়। গ্রুপে সার্চ করলেই ইন্টারভিউ এক্সপেরিয়েন্স পাবেন। ভিসা প্রাপ্তিঃ ইন্টারভিউ দেয়ার কিছুদিন পরে আপনি পাসপোর্ট কালেকশনের ডাক পাবেন। সময় মত রিসিপ্টসহ চলে যাবেন এবং পাসপোর্ট কালেক্ট করবেন। সিটিভেদে ভিসা প্রাপ্তির সময় কম-বেশী হতে পারে। বেশী দিন হয়ে গেলে সিটিসেন্টারে মেইল করে আপডেট জানতে পারবেন। আর হ্যা, পাসপোর্ট অনেক সময় ভিসা ছাড়াও আসতে পারে! যথাযথ কারণ দর্শিয়ে আপিল করলে আবার ভিসা পেতে দেখছি! তবে রিজেকশন রেট একদমই কম। মনে রাখবেনঃ কোথাও দুই নাম্বারি করার চেষ্টা করবেন না, ওরা কিন্তু বাঙালী না!   লিখেছেন- সুমন আকরাম এমএসসি ইন হাই ইন্টিগ্রিটি সিস্টেমস (অধ্যয়নরত) ফ্রাংকফুর্ট ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস, জার্মানি