আব্বায় ছুডু বেলা মইরা যাওয়ার পর, এই একটা বট গাছের ছায়ায় বইসা বাতাস খাইয়া, শ্বাস নিয়াই আমি বড় হইছি। বাইত গেলে আমি বাসায় যতক্ষণ ই থাকি চুপচাপ থাকি, মাঝে মইধ্যে আম্মার রুমে যাই, যাইয়া চুপ কইরা আম্মার পাশে কাইত হইয়া হুইয়া থাকি। আম্মা তহন বুঝতে পারে, আমার মনডা খুব ভালা নাই।
আমার আম্মার মাথায় আমারে নিয়া দুইন্নার দুশ্চিন্তা ঘুরে। আমার আম্মার সময়ডা এহন কাডে খালি আমরা ভাইবোনের লাইগা দোয়া কইরা।
আমার আম্মায় এক আমার দিকে চাইয়াই কত বাটি হেমলক যে গিইল্লা খাইয়া রইছে এই কথা ভাবলে আমার বুকটা মাঝে মইধ্যে খুব চিপ দিয়া ধরে। আমি তহন চোউক্ষের সামনে খালি আমার আম্মারেই দেহি, বাসার ছাদে আইসা চিক্কার দিয়া কয়েকবার আম্মা কইয়া ডাকলাম, এহন আমার শান্তি লাগতাছে।
আমার কাছে এহন মনে অইতাছে এই দুইন্নাত কোনো পাপ নাই, কোনো অশান্তি নাই। মগজের পইত্তেকটা কোষের ভিত্রে ভিত্রে কেমন জানি শান্তি লাগতাছে, একটা পবিত্র শান্তি। জগত সংসারে যে অসুখ লাগছে হেই অসুখ সারলেই আম্মারে লইয়া এই শহরে আমু, আমি আর আম্মায় মিইলা সারাদিন রিক্সা একটা ভাড়া কইরা ঘুরমু।
শহরের সবচাইতে মজার বিরানিডা দুই মায় পুতে মিইল্লা খামু। আমার মায় আইসক্রিম খুব পছন্দ করে, এক বক্স আইসক্রিম কিইন্না দুই মায়ফুতে বইয়া সি আর বি তে গিয়া খামু। ওই জায়গায় গেলে আমার মনডা ভালা হইয়া যায় আরো, আর ওই জায়গায় যদি আমার লগে আম্মা থাহে তহন, ওই জায়গাটা জান্নাতুল ফেরদাউস হইয়া যাবে।
আম্মায় ফেসবুক কিতা বুঝে না খুব একটা, লেইখা রাখলাম, আমার ঘরে যদি একটা বাত্তি আহে সেই বাত্তি একসময় এই লেখা তার আম্মারে পইড়া শুইনাইবো হয়তো।
সেও তার আম্মারে নিয়া এমন ভাবুক আমি চাই, আমি চাই সেও তার আম্মারে যহন মিস করবো, ছাদে যাইয়া চিল্লান দিয়া আম্মা কইয়া ডাকবো মগজের প্রত্যেকটা কোষের ভিত্রে পবিত্র শান্তি ঢুকাইয়া ঘুমাইতে যাইবো।
শান্তির ঘুম। যেই ঘুম সে অনেকদিন ধইরাই ঘুমাইতে পারে না।
[শামীম আহম্মেদ-এর ফেইসবুক থেকে]